খেলা

হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে আবার তা তুলে নিলেন তামিম ইকবাল

কাজী রুবেল আলম : অবেশেষে সিদ্ধান্ত পাল্টানের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। অভিমান ভুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন তিনি। শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকালে গণভবন থেকে বের হয়ে সংবাদমাধ্যমকে এমনটি বলেছেন এই ওপেনার।

তামিম বলেন, আজ দুপুরবেলায় আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় দাওয়াত করেছিলেন। ওনার সঙ্গে অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার অবসর এই মুহূর্তে তুলে নিচ্ছি। কারণ আমি সবাইকে না বলতে পারি কিন্তু দেশের যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তি, তাকে না বলা আমার পক্ষে অসম্ভব।

এদিন তামিম ইকবাল স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গণভবনে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও জাতীয় দলের সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বিসিবি সভাপতি ও মাশরাফির বড় ভূমিকা ছিল জানিয়ে তামিম বলেন, অবশ্যই নাজমুল হাসান পাপন ভাই ও মাশরাফি ভাইয়ের বড় ভূমিকা ছিল। মাশরাফি ভাই আমাকে ডেকে নিয়েছেন। পাপন ভাই সাথে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেড় মাসের জন্য একটা ছুটিও দিয়েছেন। আমি যেন মানসিকভাবে আরেকটু ফ্রি হতে পারি।

প্রসঙ্গত, গতকাল (বৃহস্পতিবার ৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। ৫ অক্টোবর ভারতে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে তার হঠাৎ অবসরের ঘটনায় পুরো দেশ চমকে যায়।

যে কারণে তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ৬ জুলাই হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। বিশ্বকাপের ঠিক আগে বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়কের অবসরের ঘোষণায় চমকিত ক্রিকেট ভক্তরা ।

ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সবারই জানার আগ্রহ হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তামিম? এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে তামিম কিছু না বললেও সেটা অনুমান করা কঠিন কিছু নয়।

তার ফিটনেস নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু মন্তব্য করেছেন। যে বক্তব্য তামিমকে আহত করে থাকতে পারে। ১৬ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর কর্তাব্যক্তিদের ধারাবাহিক এমন আচরণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তামিম।

অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথোপকথনেও তামিম এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন বলে জানা গেছে। বিষয়গুলোকে নিজের জন্য সম্মানজনক মনে করেননি দেশসেরা এই ওপেনার।

এছাড়া কড়া হেড মাস্টার হিসেবে খ্যাত জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ব্যাপারেও তামিম ইকবালের কিছুটা ক্ষোভ ছিল। তামিম নাকি বলেছেন, যে পরিমাণ চাপ এ মুহূর্তে তাকে নিতে হচ্ছে, সেটা নেওয়ার মতো মানসিক অবস্থায় তিনি নেই। এর চেয়ে খেলা ছেড়ে পরিবারকে সময় দেওয়াটাই শ্রেয়।

সংবাদ সম্মেলনে তামিম জানিয়েছেন, অবসরের সিদ্ধান্ত হুট করে নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। তার প্রথম চিন্তা ছিল শুধু টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ পর্যন্ত ওয়ানডে খেলতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেটা আর হলো না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই অবসর নিয়ে নিলেন। এর আগে গত বছরের ২২ জুলাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন তামিম।

প্রসঙ্গত, তামিম ইকবাল দেশের হয়ে টেস্ট, ওয়নাডে ও টি-টোয়েন্টি মিলে ৩৮৯ ম্যাচে অংশ নেন। ব্যাট হাতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৫টি সেঞ্চুরি আর ৯৪টি ফিফটির সাহায্যে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ২০৫ রান করেন তামিম। 
ছবিঃ সংগৃহিত