কমিউনিটি

সিডনিতে জীবনের গল্প শোনালেন আনোয়ারা সৈয়দ হক

জন্মভূমি ডেস্কঃ গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রশান্তিকা আয়োজিত ‘দুর্জয় প্রাণের আনন্দে আনোয়ারা সৈয়দ হক সন্ধ্যায়’ মিলিত হয়েছিলেন সিডনির সুধিজনেরা। অনুষ্ঠানে সকলকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। এছাড়াও আরো শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ড. মোহাম্মদ আলী, ডা. শাফিন রাশেদ, ড. শাখাওয়াৎ নয়ন, কামাল পাশা, শফিকুল আলম।

বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক, কবি, প্রাবন্ধিক, চিকিৎসক আনোয়ারা সৈয়দ হক এই আয়োজনে মুগ্ধ হয়ে বলেন “ আমি ভাবিনি আমাকে নিয়ে তোমরা এমন আয়োজন করবে ! তোমরা বাংলা, বাঙালিত্বকে প্রবাসের মাটিতে যেভাবে ধরে রেখেছো, দেখে এবং শুনে আমি সত্যি মুগ্ধ হয়েছি।” 
প্রশান্তিকার আয়োজনে ‘দুর্জয় প্রাণের আনন্দে, আনোয়ারা সৈয়দ হক সন্ধ্যা’র আয়োজনের পরে মুগ্ধতা জানালেন এভাবেই বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক, কবি, প্রাবন্ধিক, চিকিৎসক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

পুরো অনুষ্ঠানে বক্তরা এবং তিনি নিজে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সাথে তাঁর জীবন যাপন ও সাহিত্যের গল্প বললেন।  আনোয়ারা সৈয়দ হক ও তাঁর প্রয়াত স্বামী সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের লেখা থেকে পাঠ করেন শহিদুল আলম বাদল, অপু, ওমর আয়াজ অনি এবং নেহাল নেয়ামুল বারী। লেখকের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে বক্তব্য দেন সিডনিবাসী কলামিস্ট ও ছড়াকার অজয় দাশগুপ্ত।

৬০ এর দশকে লেখালেখির শুরু করেন আনোয়ারা সৈয়দ হক। প্রথম বই বের হলো ৮২ সালে। এতোদিন লেগেছিল কেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন- ঘরের সাথী স্বামী সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হক ততোদিনে ফুলটাইম লেখক হয়ে গিয়েছেন। খুশি মনেই তিনি সংসার, চিকিৎসা পেশায় মনোনিবেশ করেছিলেন। তারপরও হাল ছাড়েননি। লেখালেখির কারণেই ৬৯ বছর বয়সে জুটেছে বাংলা একাডেমি পুরস্কার। মাত্র কয়েক বছর আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে ভূষিত করেছেন একুশে পদকে। মাঝে পেয়েছেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রনী ব্যাংক পুরস্কার, মাইকেল মধুসুদন পুরস্কার, শিশু একাডেমী পুরস্কার এবং অন্যান্য আরও পদকে ভূষিত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন সিডনির সিনিয়র সিটিজেন গামা আব্দুল কাদির। তিনি অজয় দাশগুপ্ত, শফিকুল আলম এবং আনোয়ারা সৈয়দ হককে নিয়ে মঞ্চে উপবিস্ট হন। আনন্দ আয়োজনের মধ্যমনি আনোয়ারা সৈয়দ হক তাঁর স্মৃতির ঝাপি খুলে দিয়ে সকলকে  মুগ্ধ করলেন। প্রশান্তিকার পক্ষ থেকে আনোয়ারা সৈয়দ হককে প্রদান করা হয় বিশেষ সম্মাননা। এ উপলক্ষে তাঁকে ফুল, বই এবং সম্মাননা সনদ উপহার দেয়া হয়। তিনি এই সম্মাননা সাদরে গ্রহণ করেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে গিয়ে লেখক ও কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্ত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে এবং সংস্থা কর্তৃক পুরস্কারে ভূষিত হন। অভিনন্দন স্বরুপ তাঁকেও প্রশান্তিকার পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও বই পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রশান্তিকা সেরা লেখক ২০২৩ ঘোষণা করা হয়। কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক পিয়ারা বেগমকে এবছরের সেরা লেখক পুরস্কার দেয়া হয়। তিনি বাংলাদেশে থাকার কারণে তাঁর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন লেখক ও সংগঠক অনীলা পারভীন। এ উপলক্ষে তাকে সম্মাননা সনদ ও ১০ হাজার টাকার বই উপহার দেয়া হয়।

অনুষ্ঠান শেষে আনোয়ারা সৈয়দ হকের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্ব সঞ্চালনা করেন প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। এই পর্বে অংশ নেন পূরবী পারমিতা বোস, অনীলা পারভীন, মোহাম্মাদ আলী, শাফিন রাশেদ, আকাশ কামরুল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন শফিকুল আলম ও তাঁর কোম্পানি এ ওয়াই কমার্শিয়াল ক্লিনিং। ছবি তুলেছেন সরকার কবিরউদ্দিন ও এডওয়ার্ড অশোক অধিকারী। সঞ্চালনা করেছেন কথাসাহিত্যিক ও প্রশান্তিকা বার্তা সম্পাদক আরিফুর রহমান।