কমিউনিটি

সিডনিতে একুশের আলোচনা অনুষ্ঠান ও পিএস চুন্নুর মৃত্যুতে স্মরণ সভা

জন্মভূমি রিপোর্টঃ সিডনিতে ২১শে ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) একুশের আলোচনা অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক পিএস চুন্নুর মৃত্যুতে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিডনি-অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অস্ট্রেলিয়ার সম্মিলিত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সিডনির  একটি ফাংশান সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।  

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন এমপি। এছাড়া অনুষ্ঠানে যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান কচি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিডনি-অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি গাউসুল আলম শাহাজাদা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলনে সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানে হয় সেই সাথে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা পিএস চুন্নুকে ও স্মরণ করা হয়। ।

একুশের আলোচনা ও স্মরণ সভা  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিলো বলে বাংলাদেশ পেয়েছি, আর শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছিলো বলে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ পেয়েছি।এছাড়া বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন তখনই হবে যখন আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন ,আজকে যার মৃত্যুতে এই স্মরণ সভা, প্রয়াত সেই নেতা পিএস চুন্নু ভাইয়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। উনাদের মতো নেতা আওয়ামী লীগে ছিলেন এবং আছেন বলেই আওয়ামী লীগ এতো শক্তিশালী দল।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা এমিরেটস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যথার্থতার কথা সাংবিধানিকভাবে তুলে ধরেন। তিনি প্রয়াত চুন্নুর স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. সিরাজুল হক ভাষা আন্দোলনের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন বাংলাদেশের সকল অর্জনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশে যত কল্যাণকর কাজ হয়েছে, যত উন্নয়ন হয়েছে, সবই আওয়ামী লীগের মাধ্যমে হয়েছে। তিনি প্রয়াত নেতা পিএস চুন্নুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি আরও বলেন, আজকের প্রধান অতিথি নূর-ই-আলম-চৌধুরী লিটনের নিকট কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কেননা অস্ট্রেলিয়ায় আওয়ামী রাজনীতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাছাড়া তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা শিবচরের উন্নয়নের রুপকার।

প্রয়াত পিএস চুন্নুর সহধর্মিণী ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি বিলকিস জাহান স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কান্নাসিক্ত কন্ঠে বলেন, এভাবে সারাজীবনের সঙ্গীকে হারিয়ে ফেলবো, তা কল্পনায়ও ভাবিনি। চুন্নুকে ছাড়া আমার এই জীবনের আর যেন কোনো মানেই নেই। শুধু বলবো ওর মতো ভালো মানুষ আমি আর দ্বিতীয়টি দেখিনি। সবাই চুন্নুর জন্য প্রার্থনা করবেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক খান রতন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান কচি বলেন, আজকের একুশের অনুষ্ঠানের সাথে পিএস চুন্নু ভাইয়ের স্মরণ সভা ভাবতেই বুকের মধ্যে বেদনা অনুভব হচ্ছে। আজকে আমার জায়গাতে তাঁরই কথা বলার কথা ছিলো। শুধু বলবো প্রিয় চুন্নু ভাই আপনি পরপারে ভালো থাকুন। আপনার আদর্শ আমরা সারাজীবন ধরে রাখবো।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিডনি-অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি গাউসুল আলম শাহজাদা স্মরণ সভায় তার বক্তব্যে ভাষা শহিদদের ও পিএস চুন্নুর  প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, মৃত্যু মানেই একেবারে চলে যাওয়া নয়, কীর্তিমানেরা পৃথিবীতে তাদের কর্মময় গুণাবলি রেখে যান। জীবিত মানুষেরা সেই গুণাবলি ধরে রাখেন। পিএস চুন্নু আমাদের স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিডনি-অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আজাদ বলেন, আজকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি, বাঙালি জাতির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। শ্রদ্ধা জানাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যিনি ছিলেন ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলনের অগ্রপথিক। জয় হোক জাতির পিতার আদর্শের।

তিনি আরও বলেন, আজকে যার উদ্দেশ্যে এই স্মরণ সভা, তিনি ছিলেন আমার প্রিয় নেতা ও প্রিয় অভিভাবক পিএস চুন্নু আঙ্কেল। তাঁর সাথে আমার শুধু রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিলো না, তাঁর সাথে ছিলো আমার পারিবারিক সম্পর্ক। বিশেষ করে তাঁর সাথে আমাদের সেই পারিবারিক সম্পর্কের কথা বলে শেষ করা যাবে না। যাহোক, প্রয়াত কীর্তিমান চুন্নু আঙ্কেলের প্রতি জানাচ্ছি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, অনারেবল প্যাট ফার্মার এএম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ সিডনি শাখার সভাপতি ড. মাসুদুল হক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার উপদেষ্টা ড. রতন কুন্ডু। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম দিদার হোসেন ও শাহ কামাল, আনিসুর রহমান রিতু প্রমুখ।

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ অস্ট্রেলিয়ার নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সভাপতি জাকারিয়া আল মামুন স্বপন। 
এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মেলবোর্নের সভাপতি ড. মাহবুবুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মো. রাশিদুল হক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি আমিনুল ইসলাম রুবেলসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, কালাম খান ও মোস্তাফিজুর রহমান রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম দিদার হোসেন ও শাহ কামাল, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল আলম লাবু, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুস সালাম,  আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. তরিকুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. মেহেদী হাসান, সদস্য জহির শেখ ও নজরুল ইসলাম।  

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেনবাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক পূরবী পারমিতা বোস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিডনি-অস্ট্রেলিয়ার সহ-সভাপতি সরোয়ার হোসেন ও জহির চেয়ারম্যান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিক হাসান লিপু ও ফুয়াদ শিহাব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান মেন্থন, সালাউদ্দিন বেপারী ও ইমরান হোসেন, সদস্য মিরাজ হাসান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অস্ট্রেলিয়ার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈকত পাল সেতু, ছাত্রলীগ নেতা অর্ক হাসান, ফাহাদ  আজগর ও  সাদমান সৌমিক। অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, নাজমুল হাসান, ইমরান হোসেন, জুয়েল হাওলাদারসহ প্রমুখ নেতাকর্মী। এছাড়া অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির  ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ছবিঃ সরবরাহকৃত