শীর্ষ সংবাদ বাংলাদেশ

নির্বাচিত শিরোনামঃ কে হচ্ছেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি?

নির্বাচিত শিরোনামঃ 
কে হচ্ছেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি?

আবু রেজা আরেফিন: বাংলাদেশের একজন একজন নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে  এপ্রিল ২০২৩ এ। ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটের। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। ওই সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ২ মেয়াদ কালের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। সেই বিবেচনায় বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রাথী হতে পারবেন না। আর তাই একজন নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিতে হবে। আগামী বছর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই দিকটি লক্ষ রেখে বর্তমান সরকারের  একজন নতুন রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের সপ্তম ভাগে ১২৩- এ লিপিবদ্ধ আছে, ‘রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ-সমাপ্তির তারিখের পূর্ববর্তী নব্বই হইতে ষাট দিনের মধ্যে শূন্যপদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে; তবে শর্ত থাকে যে, যে সংসদের দ্বারা তিনি নির্বাচিত হইয়াছেন সেই সংসদের মেয়াদকালে রাষ্ট্রপতির কার্যকাল শেষ হইলে সংসদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অনুরূপ শূন্যপদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে না, এবং অনুরূপ সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির শূন্যপদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিগত সংসদ আমলে নির্বাচিত হয়েছেন এবং বর্তমানে সংসদ বহাল আছেন, মেয়াদ আছে এবং আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ শেষ হবে। সুতরাং পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই।’ সংবিধানের একই ভাগে ১১৯- এ রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর অর্পিত আছে।

নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।

বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত করবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন। তাই রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, সেটির দিকে তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশের মানুষ। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার আগে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন। বতমান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় থাকা ব্যক্তিদের তালিকায় তাঁর নাম আলোচনার শীর্ষে রয়েছে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এর নাম ও আলোচনায় রয়েছে। তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদায় দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে, ১৯৯৬ সালের মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি অর্থ সচিব ছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মসিউর রহমান।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, যে নামগুলো আলোচনায় আছে, তা দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও বিবেচনায় রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি কাজ করছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও যোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি করা হবে।

ক্ষমতাসীন দলের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনো ব্যাক্তিকে মনোনীত করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করেছিলো , পরবর্তীতে মতভেদের কারণে অনাস্থা ভোটে তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়তে হয়।  
ছবিঃ সংগৃহিত