শীর্ষ সংবাদ কমিউনিটি

'গুড মর্নিং বাংলাদেশ ‘ নামে অস্ট্রেলিয়া'স বিগেষ্ট মর্নিং টি’র আয়োজন হলো সিডনির মিন্টোতে

জন্মভূমি রিপোর্ট: সিডনির মিন্টো সাবার্বের রন মূর কমিউনিটি সেন্টারে  গত ১৪ মে ২০২৩, এই প্রবাসের অন্যতম  বৃহত্ততম  প্রবাসী বাংলাদেশী মহিলাদের সংগঠন  বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়া, গুড মর্নিং বাংলাদেশ নামে ‘অস্ট্রেলিয়া বিগেষ্ট মর্নিং টি’ র আয়োজন করে। মূল আয়োজক ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির সাথে মিলিতভাবে এই আয়োজনটি করে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়া। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল সকালের নাস্তা ও চায়ের এই আয়োজন। সিডনির বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা সকাল থেকে আসতে থাকে এই নাস্তার আয়োজনে এবং একসময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো আয়োজন স্থান।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরা ও ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির সদস্যরা , জন্মভূমি টেলিভিশনের ইভেন্ট ডিরেক্টর কাজী রুবেল আলম এবং স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী নারীরা মিলে সকালের নাস্তার জন্য, গরম পারটা, গরুর মাংস, ভাজি, আলুর দম ,সুজির হালুয়া, পুরি, সিংগারা, ছামুচা, বিভিন্ন পদের মিষ্টি ও পিঠা, চটপটি ইত্যাদি তৈরী ও বিক্রি করে। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে মিসেস লায়লা হক একাই  কয়েকশত পরোটা নিজ হাতে বানিয়ে গরম গরম পরিবেশন করেন। এছাড়াও আমব্রিন হোসেন , মিসেস রফিকুল আলম বন্যা , ও Aussie NSUsers Association চা সহ বিভিন্ন খাবারের  ষ্টল দেন। লেখক আবু সাঈদ তার লেখা বই বিক্রি করে ক্যান্সার কাউন্সিল ফান্ডে সমুদয় অর্থ  দান করেন যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

প্রতিবছর বিশ্বে ক্যান্সার রোগে বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অর্থ সংকটে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়। সিডনিতে ক্যান্সার রিসোর্স ডেভেলপমেন্টকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার লক্ষেই গুড মর্নিং বাংলাদেশ নামে ‘বিগেষ্ট মর্নিং টি’ কর্মসূচিটি ২০০১ সালে শুরু করেছিলেন মরহুম ডঃ আব্দুল হক। তারই ধারা বাহিকতায় ছিল এই আয়োজন।

সাবরিনা হোসেনের সাবলীল উপস্থাপনায় প্রথমে উপস্থিত সবাইকে এই মহতী অনুষ্ঠানে আসার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়, যেহেতু দিনটি মাদার্স  ডে হিসাবে পালিত হচ্ছে তাই তিনি সকল মা দের শুভেচ্ছা জানান , পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বাংলাদেশ লেডিস ক্লাবের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এই আয়োজনের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদা স্বপ্না , তিনি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বক্তব্যে এই আয়োজনকে সার্থক করে তোলার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডাক্তার আয়াজ চৌধুরী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন গুড মর্নিং বাংলাদেশের মূল উদ্যোক্তা মরহুম ডঃ আব্দুল হক এর কথা, যিনি ২০০১ সালে এই আয়োজনটি শুরু করেছিলেন। ডাঃ আয়াজ ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়াকে এই আয়োজনের সহযাত্রী হিসাবে যোগ দেয়ার জন্য , এবং তিনি আশা করেন আগামীতে এই এলাকায় আরো বড় আয়োজন তারা করতে পারবে।

এর পর পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং মরহুম ডঃ আব্দুল হক এর সুযোগ্য কন্যা রুবায়েত হক সাথী কে , এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য যে তিনি তার পিতার সাথে এই আয়োজনে যুক্ত ছিলেন ,  পিতার মৃত্যুর পর স্বামী তানভীর শহীদ কে সাথে নিয়ে এটিকে এ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। গত ২১ বছরের হিসাব অনুযায়ী ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির ব্যানারে গুড মর্নিং বাংলাদেশ এর সকালের নাস্তার আয়োজন থেকে গত বছর ২০২২ পর্যন্ত ৩৩৭ হাজার ডলার সংগ্রহ করে  নিউ সাউথ ওয়েলস ক্যান্সার কাউন্সিলে জমা দেয়। অস্ট্রেলিয়াতে এই সংগঠনটি ক্যান্সার কাউন্সিলের দ্বিতীয় বৃহতম ডোনার হিসাবে স্বীকৃত। সাথী তার বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়াকে এই আয়োজন সম্মিলিতভাবে করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে আরো সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

গুড মর্নিং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ আব্দুল হক এর স্ত্রী লায়লা হককে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত সুধিমন্ডলী বিপুল করতালির মাধমে তাঁকে অভিনন্দন জানান , এখানে একথা স্বীকার করতে হবে যে লায়লা হক অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে সেই প্রথম থেকে মরহুম ডঃ আব্দুল হকের পাশে থেকে তাকে সাহস জুগিয়েছেন এ ধরণের একটি কঠিন চ্যালেন্জিং কাজ করার জন্য। প্রতি বছরের মত এবারও তিনি নিজ হাতে কয়েকশত পরটা বানিয়েছেন এবং তা গরম গরম ভেজে সবাইকে পরিবেশন করেছেন।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার উপদেষ্টা ডাঃ জেসি চৌধুরী, তার বক্তব্যে নারী শক্তির কথা পুনব্যাক্ত করেন, তিনি বলেন নারীরা সম্মিলিত ভাবে চেষ্টা করলে সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে , তিনি বালাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এযাবৎ যারা ক্যান্সারে মারা গেছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে ক্যান্সার গবেষণার জন্য আর্থিক সহায়তার কার্যক্রমে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ শায়লা ইসলাম এই আয়োজনের প্রথমভাগে উপস্থিত হয়ে এই কার্যক্রম শুরু করতে সাহায্য করেন , তবে ব্যাক্তিগত অন্য একটি দাওয়াত থাকায় বেশিক্ষন অবস্থান করতে পারেননি , তিনি সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই আয়োজনটি সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান।  

উপস্থিত সুধী বৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পবেল টাউন সিটি কাউন্সিল এর কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী , তিনি বাংলাদেশ লেডিস ক্লাবের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং বলেন তিনি সকল সময়ে যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার ভালো কাজগুলো সমর্থন করবেন ও পাশে থাকবেন। এবং তিনি কাউন্সিল সংক্রান্ত যে কোনো কাজে সহায়তা করবেন বিশেষ করে এ ধরণের জন কল্যাণকর অনুষ্ঠান করার জন্য হলের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করবেন।

ক্যাম্পবেল টাউন সিটি কাউন্সিল এর আরেক কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদ তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে গুড মর্নিং বাংলাদেশ নামক এই আয়োজনে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণ এর জন্য প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি ক্যাম্পবেল টাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়রের পক্ষে থেকে এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট রাহেলা আরেফিন তার বক্তব্যে সবাইকে এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে এ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান , এবং তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে বিশ্ব মা দিবস এর শুভেচ্ছা জানান সকল মায়েদের। তিনি গুড মর্নিং বাংলাদেশ এই আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রুবায়েত হক সাথীকে ধন্যবাদ দেন এই আয়োজনটি সম্মিলিতভাবে করার সহযোগিতা করার জন্য ,তিনি আরো ধন্যবাদ জানান আরেক জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডাঃ আয়াজ চৌধুরী ও মিসেস লায়লা হক কে।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার জেনারেল সেক্রেটারি শিরিন আক্তার মুন্নি আগত সকল অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন অত্যান্ত সংক্ষিপ্ত নোটিশ এবং প্রথমবারের মত করা এই আয়োজনে আপনাদের বিপুল উপস্থিতি আমাদের ভবিষৎ চলার পথে আরো অনুপ্রেরণা যোগাবে। আপনারা যেমন অতীতে এবং বর্তমানে আমাদের পাশে থেকেছেন আগামীতেও আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করছি।

পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য নুসরাত জাহান স্মৃতিকে , তিনি তার স্বামী আবু সাঈদ এর লেখা বই এই আয়োজনে উপস্থিত বিভিন্ন সুধীজনের কাছে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ ক্যান্সার কাউন্সিলে দান করেন। তিনি সকলকে এ ব্যাপারে  সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এরপর পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় মিসেস মিলি ইসলামকে যিনি ক্যান্সার কাউন্সিলের ফান্ডে ১০০০ ডলার অনুদান দেন , উপস্থিত সুধীমন্ডলী বিপুল করতালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানায় , তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে এমন মহতী উদ্যোগে এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য সাকিনা আক্তার তার বক্তব্যে এই আয়োজন স্বার্থক করে তোলার জন্য যাদের অবদান রয়েছে তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং কমিউনিটির সকলের কাছে আগামীতে আরো সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রবীণ সংগঠক গামা আব্দুল কাদের তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার এমন একটি উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন , তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন এমন ধরণের উদ্যোগকে সফল করার জন্য দল মত নির্বিশেষে কমিউনিটির সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট শামীমা আলমগীর সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে , তাদের আগামী কর্মসূচি গুলোতে কমিউনিটির সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে গুড মর্নিং বাংলাদেশ এর এই আয়োজনের আহ্বায়ক রওশন জাহান পারভীন তাদের এই প্রয়াসে সকলের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান, বিশেষ করে লেডিস ক্লাবের সদস্য যারা নিরলসভাবে পরিশ্রম করে এই আয়োজনকে সফল করতে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতে আরো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেন।

গুড মর্নিং বাংলাদেশ এর এই আয়োজনে সুধীজনদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর ডঃ সাবরিন ফারুকী , ডাঃ নাজমুন নাহার ,রাজনীতিবিদ ডঃ সিরাজুল হক ,ডাঃ জাহিদুল ইসলাম , ডাঃ নাজমুল হুদা , নাসরিন মোশারফ ,ডাঃ তোজ্জামেল হোসাইন , এমডি শফিকুল আলম , মনিরুল হক জর্জ ,আবু তারিক , মোবারাক হোসেন , জাকির হোসেন ,মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসাইন , ডঃ মোশারফ হোসেন , নাজমুল হুদা ,মাহফুজুল চৌধুরী খসরু ,সাজ্জাদ হোসাইন, আশিকুর রহমান অ্যাশ , মোঃ নজরুল ইসলাম, সাজ্জাদ সিদ্দিকী , দুলাল তালুকদার, আলমগীর শাহ , শামীম আহমেদ, শাহীন শাহনেওয়াজ , লরেন্স ব্যারেল ,ন্যান্সি ব্যারেল ,গাজী সানোয়ারুল হাবিব,বজলুল আজাদ, রানা শরীফ , সাখওয়াত হোসেন বাবু , ডঃ আজিম চঞ্চল , রফিকুল আলম  প্রমুখ।

সকালের নাস্তার এই আয়োজন থেকে প্রাপ্ত  ৬১৭০ ডলার নিউ সাউথ ওয়েলস ক্যান্সার কাউন্সিলের তহবিলে জমা করা হয়। উত্থাপিত এই  অর্থ  ক্যান্সার কাউন্সিল ব্যয় করবে ,ক্যান্সার গবেষণা, শিক্ষা, প্রতিরোধ এবং রোগীর সহায়তা পরিষেবা গুলিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত সকলকে সহায়তার জন্য। ফ্যামিলিজ অফ বাংলাদেশী কমিউনিটি সিডনি এর ব্যানারে ও বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় পরিচালিত হয় এই কার্যক্রম। এতে বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ ছাড়াও অনেক অস্ট্রেলিয়ানরাও যোগ দেন। পুরো ইভেন্টটি সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব অস্ট্রেলিয়াকে সহায়তা করেন বাংলা হেয়ার, সিডনি প্রতিদিন ও জন্মভূমি টেলিভিশন।